দুর্নীতি ও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ ওঠা বিচারপতিদের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বুধবার তাদের বিষয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের দপ্তরে একে একে প্রবেশ করেন যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে হাইকোর্টের সেই বিচারপতিরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছয়জন বিচারপতি প্রধান বিচারপতির চায়ের দাওয়াতে এসেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তারা হলেন- বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামান, বিচারপতি শাহেদ মো. নুরউদ্দিন, বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম।
এছাড়া দাওয়াতপ্রাপ্ত বিচারপতি খুরশদি আলম সরকারসহ ছয়জন এখনও প্রধান বিচারপতির চায়ের দাওয়াতে যাননি। তবে তারা না গেলেও ছুটিতে পাঠানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
তবে এ ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভুঁইয়া বলেছেন, ‘আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। আমাকে ক্ষমা করবেন।’
জানা গেছে, আমন্ত্রণ পাওয়া ১২ বিচারপতির বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তারা সাবেক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ পাওয়া দলবাজ বিচারপতি হিসেবে চিহ্নিতদের পদত্যাগ দাবি করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। সাধারণ আইনজীবীরাও দলবাজ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবি করে আসছেন।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অনুগত বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে আজ বুধবার সকালে হাইকোর্ট ঘেরাও করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন। তাদের স্লোগান ও অবস্থান কর্মসূচিতে উত্তাল পুরো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে এসে পৌঁছায়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই,’ ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ,’ ‘স্বৈরাচারের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান,’ ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, হাইকোর্ট ঘেরাও হবে,’ ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা,’ ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম,’ ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারকদের দুপুর ২টার মধ্যে পদত্যাগ করারও আল্টিমেটাম দেন।
এছাড়া সুপ্রিমকোর্টের বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরাও আওয়ামী সরকারের দোসর বিচারপতিদের পদেত্যাগের দাবিতে সমাবেশ করেছেন।