দামি স্যুট-প্যান্ট পরা একজন ভদ্রলোক হাতে প্লাস্টিকের মোটা পাইপ নিয়ে হাতবাঁধা এক কিশোরীকে পিটাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্যুট-প্যান্ট পরিহিত ব্যক্তি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আরাফাত। নগরীর মোমিন রোড এলাকায় বন্ধু রাশেদের বাসায় দাওয়াতে গিয়ে তিনি এই জঘণ্য কান্ডটি ঘটিয়েছেন বলে নিজেই স্বীকার করেছেন। ওই এস আই দাবি করেন, বন্ধু রাশেদের বৌ স্বর্ণালংকার চুরির অভিযোগ তুলে গৃহপরিচারিকা কিশোরীর দুই হাত ওড়নায় বেধে বেধড়ক পেটাচ্ছিল। তার নির্যাতন থেকে বাঁচাতেই প্লাস্টিকের পাইপ দ্বারা তিনি সামান্য শাসন করেন মাত্র।
কিশোরীকে অমানবিকভাবে পিটানোর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এরইমধ্যে এসআই আরাফাতকে ক্লোজড করে নগর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুর কাদের জানান, কিশোরীকে পিটানোর ভিডিও প্রকাশ হবার পর এসআই আরাফাতকে ক্লোজড করা হয়েছে। চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার বিষয়টি তদন্ত করছেন। তবে তিনি বিভাগীয় কোনো অভিযোগের তদন্ত করছেন, নাকি নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য প্রাথমিক তদন্ত করছেন সে বিষয়টি খোলাসা করেননি।
এদিকে অভিযুক্ত এসআই আরাফাত বলেন, আমার বন্ধু রাশেদের স্ত্রী খুবই খারাপ টাইপের মহিলা। আমি যখন কিশোরীকে মারধর করছিলাম তখন বন্ধুর স্ত্রী গোপনে ভিডিও করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। মূলত দাওয়াত দিয়ে আমাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে। ওই মহিলা কত খারাপ এবং ওদের বাসার কিশোরী গৃহপরিচাকে কেন মেরেছি রাশেদের সাথে কথা বললেই বিস্তারিত জানতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এসআই আরাফাতের দেয়া মুঠোফোন নম্বরে বারবার চেষ্টা করেও রাশেদের মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। একবার তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন লাইন কেটে দেন এবং অন্যবার সংযোগ কাটেন রাস্তায় থাকার কথা বলে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চট্টগ্রামের সভাপতি এডভোকেট আকতার কবির বলেন, এটি আমলযোগ্য অপরাধ। উচিত ছিল ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা। বিচারিক আদালতে এ অপরাধের বিচার করা। আইন সম্পর্কে অবগত থাকা একজন পুলিশ সদস্যের এমন কাণ্ড কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আকতার কবির বলেন, ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করলে পুলিশের ভাবমূর্তি বাড়ত।