তাপমাত্রা আগের তুলনায় বাড়ছে। বিশেষ করে গত ১০ থেকে ১২ বছর ধরে তাপপ্রবাহের মাত্রা বেড়েই চলেছে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে ঢাকায় মার্চের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহ থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হলেও ১৯৯৭ সালের পর থেকে এতে ভিন্নতা দেখা গেছে। এখন রংপুর, খুলনাসহ প্রায় সব বিভাগে বর্ষা মৌসুমেও তাপপ্রবাহ দেখা যাচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, আগে মার্চের মাঝামাঝিতে তাপপ্রবাহ শুরু হলেও এখন এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের একদম শেষের দিকে তাপপ্রবাহ শুরু হচ্ছে। আগে তাপপ্রবাহ বর্ষাকাল মানে জুনের শুরুতে শেষ হয়ে যেত। কিন্তু এখন সেটা হচ্ছে না। তাপপ্রবাহের সময়সীমা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, এপ্রিলে শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত চলছে। অর্থাৎ একদিকে দেরিতে শুরু হচ্ছে, অন্যদিকে শুরুর পর সেটি আর সহজে শেষ হচ্ছে না।
গবেষণায় দেখা গেছে, মৌসুমি বায়ু দেরিতে প্রবেশ করায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বর্ষাকাল পিছিয়ে যাচ্ছে। আর বর্ষাকাল দেরিতে শুরু হওয়া মানে বাংলাদেশের কৃষি খাতের জন্য তা জোরালো এক ধাক্কা। এদিকে গাছে যখন আমের গুটি আসে, সেই সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে গাছে পানির অভাব দেখা যায়। এতেও আমের গুটি ঝরে পড়ে। তাই মার্চ-এপ্রিল মাসে বৃষ্টিপাত কম হলে মাটিতে রসের অভাব দেখা দেয়।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বর্ষাকালে বৃষ্টিপ্রবণতা কমে গেছে। কিন্তু অসময়ে ভারী বা কম বৃষ্টিপাত হলে একটা দেশের কৃষি খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ ফসলের মৌসুমে বৃষ্টি না হলে ফসল বাঁচবে না, তখন সেচের প্রয়োজন হবে। আর সেচ দিতে গেলে প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়বে। এর বড় প্রভাব পড়বে কৃষি খাতে।
এদিকে দেশের অনেক জায়গায় গত কয়েক দিন ধরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকাসহ চার বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা আরও তিন দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন অবস্থায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।