ডেঙ্গু জ্বর শুরুতেই ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হতে পারে, সঙ্গে গুরুতর মাথাব্যথা, কোমর ও পিঠ ব্যথা নিয়ে। অবহেলা নয়, আজই চিকিৎসা নিন।
= শরীরে জ্বর আসার প্রথম দিন থেকেই টেস্ট করে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় করা যায়। জীবন বাজি রাখবেন না।
= তীব্র জ্বর সাধারণত ৫-৭ দিন থাকতে পারে। প্রথম দিন থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এবার যারা ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণ করেছেন, বেশিরভাগ হাসপাতালে অ্যাটেন্ড করেছেন দেরিতে।
= জ্বরের তৃতীয়-পঞ্চম দিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিপদচিহ্ন দেখা দেয় সে সময়ে। রোগীর ক্রিটিক্যাল অবস্থা শুরু হয় ওই দিনগুলোতে।
= জ্বর চলে যাওয়ার (যখন রোগী ভাবতে শুরু করে ভালো হয়ে গেছেন) পরবর্তী ২৪-৪৮ ঘণ্টাই সবচেয়ে বেশি ভয়ানক। বাইরের কোনো লক্ষণ দেখা না গেলেও শরীরে ‘ঝড়’ বইছে মূলত সেই জ্বরমুক্ত পিরিয়ডে।
= হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা, অতিরিক্ত ঘাম, দুর্বল ও দ্রুত হার্টবিট, প্রেশার অতিরিক্ত কমে যাওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা, শ্বাসকষ্ট অনুভব করা, প্রস্রাব কমে আসা, পেট ফোলা ফোলা লাগা ইত্যাদি গুরুতর বিপদচিহ্ন যা সাধারণত জ্বর ছেড়ে দেওয়ার পর দেখা দেয়।
= বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সিস্টোলিক প্রেশার অনবরত <৮০ মিমি পারদ চাপ এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে <৯০ হলে রোগী শকে (Shock) আছেন বলে ধরে নেওয়া যায়। বাসায় নিয়মিত মনিটর করুন।
= জ্বর ছেড়ে দেওয়ার ৪-৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রস্রাব না হলে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিন। নিজে নিজে বাসায় স্যালাইন পুশ করবেন না। হিতে বিপরীত হতে পারে। ফ্লুইড ওভারলোড হবে অযাচিতভাবে স্যালাইন দিলে। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুও হতে পারে।
= প্লাটিলেট ১ লাখের নিচে মানে শরীরের কোথাও প্লাজমা লিকেজ (Plasma Leakage) হচ্ছে। বিপদচিহ্ন নিয়ে সচেতন হোন, প্লাটিলেট কাউন্ট নিয়ে নয়। প্লাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজারের নিচেও অনেকের বিপদচিহ্ন দেখা দেয়নি। তাই সচেতন হোন।
= ডেঙ্গু জ্বরের ন্যাচারাল প্রসেস অনুযায়ী শুরুতে প্লাটিলেট কমতে থাকে, পঞ্চম দিন হতে সাধারণত এই প্লাটিলেট বাড়তে শুরু করে। একবার বাড়তে শুরু করলে সাধারণত আর কমে না, যা ইঙ্গিত দেয় রোগীর সুস্থতার।
= প্রেগন্যান্সি ও ডেলিভারি বা অপারেশনের অপেক্ষমাণ রোগীরা অতিরিক্ত সাবধানতা হিসেবে ডেঙ্গু টেস্ট করিয়ে নেওয়াই শ্রেয়।
= ডেঙ্গুর জটিলতায় কিডনি, লিভার, ব্রেন, হার্ট ইত্যাদি অরগান কার্যক্ষমতা হারিয়ে রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট লাগতে পারে।
লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই আস্থাভাজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এডিস মশার স্বভাব যেমন বদলিয়েছে, ডেঙ্গুর লক্ষণ ও প্রকাশ পাচ্ছে বিচিত্রভাবে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি মনোযোগী হোন।
লেখক : সহকারী পরিচালক, টিবি হাসপাতাল